পায়রার রহস্য


এক গ্রামে একজন কৃষক ছিলেন। তার পূর্বপুরুষদের দৌলতে তার কোনো অর্থের অভাব ছিল না। সেই কারণে তিনি কোন কাজ করতেন না সারাদিন বসে বসে খেতেন। তার বাড়িতে কাজ করার জন্য প্রচুর চাকর-বাকর ছিল।
তার বাড়ির সমস্ত কাজ তার চাকররা সামলাত এবং কৃষকের যা ভালো লাগতো তাই করতো। এইভাবে ধীরে ধীরে তার সম্পত্তির পরিমাণ কমতে থাকে কিন্তু তাতে সে পাততে দেয়নি।

একদিন তার এক বন্ধু তার বাড়ি আসে। তিনি কি সব বন্ধুকে বললেন তোমার কিছু কাজ করা উচিত কারণ তোমার সম্পত্তি পরিমাণ কমে যাচ্ছে। কিন্তু বন্ধুর কথা শুনেও সে কোন কাজ করেনি।

এরপর তার বন্ধু তাকে এক সাধুর পরামর্শ দেয়, তার বন্ধু বলেন, “ওই সাধুর কাছে গেলে সাধুটি পয়সা উপার্জনের রাস্তা বলে দেয়।” কৃষক তার বন্ধুর কথায় রাজি হয়ে গেল এবং ওই সাধুর কাছে গেল।
সাধুটি কৃষক কে বলল “একটি নিল পায়রা প্রত্যেকদিন তোমার গোডাউন, গোয়ালঘর ও বাড়িতে আসে। তুমি যদি পায়রা টাকে প্রত্যেকদিন সকাল ও সন্ধ্যাবেলায় দর্শন করতে পারো তাহলে তুমি আরো ধনী হয়ে উঠবে।”

এই কথা শুনে কৃষক খুব খুশি হল এবং সে প্রত্যেকদিন সকাল ও সন্ধ্যা বেলায় ওই স্থানগুলিতে উঠতে লাগলো।
একদিন সে তার গোডাউনে গেল সকালবেলায় তিনি দেখলেন তার কর্মচারীরা গোডাউন থেকে চাল বিক্রি করে দিচ্ছে। তখন তিনি ওই কর্মচারীটিকে ছাটাই করে দিলেন।
এরপর তিনি গরুর গোয়ালে গেলেন এবং দেখলেন তার গরুর দুধ এক চাকর বিক্রি করে দিচ্ছে। তখন তিনিও চাকরটিকে বাদ দিয়ে দিলেন।
এরপর তিনি রান্নাঘরে গেলেন এবং দেখতে পেলেন সেখানকার চাকর তার জিনিসপত্র চুরি করছে। কৃষক তাকেও ছাঁটাই করে দিলেন।

এভাবে কয়েকদিন চলার পর তার সম্পত্তির পরিমাণ কমে যাবা বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু তিনি সাধুর কথা মতো ওই পায়রাটিকে দেখতে পেলেন না।
কৃষক আবারো ওই সাধুর কাছে গেল এবং জিজ্ঞাসা করল আমি একদিন ও ওই নীল পায়রা টিকে দেখতে পাইনি।

সাধু তখন বলল, তুমি তো তোমার নীল পায়রাটিকে দেখতে পেয়েছ কিন্তু তুমি সেটা বুঝতে পারোনি। সাধুটি তখন বলল নিজের কর্তব্য পালন করলেই লক্ষ্মী বাড়ে।

নীতিকথা

নিজের দায়িত্ব সবসময় পালন করা উচিত। তবেই অগ্রগতি হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *