বুদ্ধির হাড়ি


একবার সম্রাট আকবর বীরবল এর উপর এতটাই রাগে পাগল হয়ে গেলেন যে তাকে তার রাজত্ব ছেড়ে চলে যেতে বললেন।বীরবল ভগ্নহৃদয়ে রাজ্য ছেড়ে চলে গেলেন এবং কাছাকাছি গ্রামের এক কৃষকের বাড়িতে আশ্রয় নিলেন।বীরবল খামারে কাজ করে তাঁর দিন কাটাতে লাগলেন।যত দিন যেতে থাকল সম্রাট আকবর ততই বেশি বেশি করে তাঁর প্রিয় সভাসদ এর অনুপস্থিতিতে ব্যথিত হয়ে উঠতে লাগলেন।একদিন সম্রাট ঠিক করলেন বীরবলের খোঁজ করার জন্য তাঁর রাজ সেনা পাঠাবেন।রাজার সৈন্যরা সব দিকে বীরবলকে খুঁজতে লাগলেন কিন্তু তাদের সমস্ত প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হলো। এই সময় সম্রাট আকবর তাঁর মাথা খাটিয়ে এক বুদ্ধিদীপ্ত উপায় বের করলেন বীরবলকে খোঁজার– তিনি ঘোষণা করলেন যে তাঁকে এক হাঁড়ি পূর্ণ বুদ্ধি এনে দিতে পারবে তাকে তিনি ওই হাঁড়ি ভর্তি করে হীরে উপহার দেবেন।এই ঘোষণার কথা কাছাকাছি সব গ্রামগুলোতে পৌঁছে গেল এবং এমনকি বীরবলও তা জানতে পারলেন।তখন গ্রামবাসীরা এক সভার আয়োজন করলেন এবং সম্রাটের প্রহেলিকার সমাধান কীভাবে করা যায় সে নিয়ে আলোচনা করলেন।বীরবল তাদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং এক মাস সময় চাইলেন।বীরবল একটি হাঁড়ি নিলেন এবং তাতে শিকড়সহ একটি ছোট গোটা তরমুজ বসিয়ে দিলেন।একমাস পরে তরমুজটি সম্পূর্ণ হাঁড়ির আকৃতি লাভ করে বড় হয়ে উঠল।তারপর সেই হাঁড়িটিকে. সম্রাটের কাছে পাঠিয়ে দিলেন আর তিনি বলে পাঠালেন যে সেই হাঁড়িটির ভিতরে থাকা বুদ্ধিটিকে তখনই বের করা সম্ভব যদি হাঁড়িটিকে না ভেঙে সেটি বের করা যায়। সম্রাট আকবরের বুঝতে অসুবিধা হল না যে এই ধরনের বুদ্ধি বীরবল ছাড়া অন্য আর কারোর হতে পারে না এবং তখনই তিনি বীরবল কে তাঁর রাজসভায় ফিরিয়ে আনতে গেলেন।

নীতিকথা

তাড়াহুড়ো কোনও সমাধান নয় কারণ তা কেবলই ক্ষতি করে, সময় নিয়ে কঠোর চিন্তা করুন কারণ প্রতিটি সমস্যারই একটি সমাধান রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *