রূপকথার দেশে


সন্ধে ঘনিয়ে এসেছে। বালকটি তবু দাড়িয়ে আছে স্টেশনের গেটে। বোঝাই যাচ্ছে কিসের যেন অপেক্ষা করছে। আমি তাকে ডাকলাম: “এই য়ে, শোনো, তুমি এখানে এতক্ষণ দাড়িয়ে আছ কেন?”

“ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি”, উত্তর দিল সে স্বপ্নাবিষ্টের মত।
“কোথায় যেতে চাও?”!

“রূপকথার দেশে। পিনোকিওর মত”।
ছেলেবেলায় পড়া কাঠের পুতুলের রূপকথার গল্পটি (পিনোকিও) মনে পড়ল আমার।

“সত্যিই নাকি? তা দেশটা কেমন?”
“জাদুর দেশ। সে দেশে বৃহস্পতিবারে কেউ স্কুলে যায় না”
“খুব মজার ব্যাপার তো! আর বাকি দিনগুলোর?”
“ওখানে সপ্তাহে একদিন শুক্রবার, বাকি ছয়দিন-বৃহস্পতিবার”।
“ওহ। তার মানে সারা সপ্তাহ.খেলা আর বিশ্রাম?”
“হ্যা। আর ওখানে ছুটি শুরু হয় পয়লা জানুয়ারি থেকে আর শেষ হয় একত্রিশে ডিসেম্বরে। এ কথা তো পিনোকিওকে নিয়ে লেখা রুপকথার বইটিতেও লেখা আছে!”

“তার মানে, ওই দেশে সারা বছর কেউ পড়াশোনা করে না?”
“অবশ্যই করে না। আমি জানি, ওখানে কোনও শ্রুতলিপি নেই, পরীক্ষা নেই, আছে শুধু ছুটি আর আনন্দ”।
আশার স্ফুলিঙ্গ জ্বলে ঊঠলো আমার চোখে।

সাথে সাথে বললাম, “আমাকে তুমি নেবে তোমার সাথে”।
“ঠিক আছে, তাহলে একসঙ্গেই যাবো আমরা” জানাল সে।

“শুধু তার আগে আমাকে বলুন, আপনি কে?”
গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি তাকে জানালাম
“স্কুলের প্রধান শিক্ষক”।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *