স্বর্ণ মুদ্রা এবং ন্যায়বিচার


ঠিক অন্যান্য দিনের মতই সম্রাট আকবরের সভায় একদিন আকবর বীরবলকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, “বন্ধু বীরবল যদি আমি তোমাকে ন্যায়বিচার এবং স্বর্ণ মুদ্রা এই দুটির মধ্যে কোনওটিকে বেছে নিতে বলি তুমি কোনটিকে বেছে নেবে?” বেশি সময় না নিয়েই বীরবল উত্তর দিলেন যে। “আমার প্রিয় প্রভু! নিঃসন্দেহে আমি স্বর্ণমুদ্রাকেই বেছে নেব“। বীরবলের এই নিমেষের উত্তরে সকলেই বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হয়ে উঠলেন এমনকি স্বয়ং আকবরও ছিলেন তাদের মধ্যে এবং সকলেই ভেবেছিলেন যে বীরবল হয়ত এই বার একবার হলেও উত্তর দেওয়ার আগে তোতলাবেন ও ইতস্থত বোধ করবেন উত্তর দিতে।আকবর তাঁকে বললেন যে, “আমি তোমার উপর ভীষণ হতাশ হয়েছি বীরবল।কেন তুমি ন্যায়বিচারের মত একটা বড় জিনিসকে বাদ দিয়ে সোনার মত এক সামাণ্য জিনিসকে বেছে নিলে?” তখন বীরবল তাঁর মুখে এক বিদ্রূপের হাসি এনে উত্তর দিলেন যে। “হে আমার দয়াপরবশ রাজা!ন্যায়বিচারের তো কোনও অভাব নেই কারণ আপনার রাজ্যের সর্বত্রই তো ন্যায়বিচার রয়েছে।আর আমি মনে করি না যে জিনিসটি আমার কাছে ইতিমধ্যেই প্রচুর পরিমাণে আছে এবং যার ফুরাণ নেই সেটির প্রয়োজন আছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করার আর কোনও প্রয়োজন আছে বলে কিন্তু হে প্রভু, এক দিন না একদিন আমার অর্থের ঘাটতি অবশ্যই হবে আর তখনের জন্য স্বর্ণ মুদ্রাটাই সবচেয়ে ভাল“। এই উত্তর শোনার পর আকবর নির্বাক হয়ে গেলেন, কিন্তু তাঁর মুখে এক বৃহৎ হাসি দেখা গেল।বীরবলের এই বুদ্ধিদীপ্ত যৌক্তিক উত্তরে তিনি অত্যন্ত খুশি হয়ে উঠলেন এবং তাঁকে 100 টি স্বর্ণ মুদ্রা উপহার দিলেন।

নীতিকথা

কথা বলার সময় বুদ্ধি দিয়ে শব্দগুলিকে বেছে নেওয়া উচিত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *