—শাহরিয়া ব্রিজ এর উপরে বিকেলবেলায় বসে থাকাকে চাকরী মনে করে। সময় মতো সে ব্রিজ এর উপরে বসে থাকে তার মনের মানুষ নুসরাতকে দেখার জন্য।বিকেল ৪টা স্কুল ছুটি হলে মায়াবতী লাজুক কন্যা ব্রিজ এর উপর দিয়ে হেঁটে যাবে আর শাহরিয়া চোখে চোখ পড়লে একটা মুচকি হাসি দিয়ে যাবে। কিন্তু কেউ কাউকে বলতে পারতেছেনা যে একজন আরেকজনকে ভালোবাসে।
-নুসরাত এর তো বুক ফাঁটে তবে মুখ দিয়ে চিৎকার দিয়ে বলতে পারতেছেনা শাহরিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।আর শাহরিয়া বলতে পারতেছেনা ভয় এ সে মনে করে নুসরাত কে ভালোবাসার কথা বললে নুসরাত যদি না কুবুল করে। তাহলেতো ব্রিজ এর উপরে অসহায় মতো বসে মায়াবতী লাজুক কন্যার মুচকি হাসিটুকু দেখতে পারবে না তাই সে ভয়ে বলতে পারতেছেনা।
“
“
___ তারা একজন আরেকজনকে অনেক ভালোবাসে। সেজন্য নুসরাত এর স্কুল বন্ধ থাকলে শাহরিয়া অসহায় মতো রাস্তা দাঁড়াইয় থাকে কখন মায়াবতী লাজুক কন্যা বারান্দা আসবে।
আর নুসরাত বারান্দা দাঁড়াইয় থাকে কখন তার মনের মানুষ শাহরিয়াকে একবার দেখবে কারণ সে জানে এ রাস্তা দিয়ে শাহরিয়া চলাপেরা করে।এভাবে চলতে থাকে বলতে না পারা ভালোবাসার গল্প।হঠাৎ একদিন নুসরাতকে দেখতে আসে খুব ভালো পরিবার।তারা নুসরাতকে দেখে পছন্দ করে পেলছে। তারা নুসরাত এর বাবাকে কথা দেয় নুসরাত বিয়ের পরে বাকি পড়ালেখা শেষ করতে পারবে।তাই নুসরাত এর বাবা বিয়েতে রাজি হয়ে গেলো কারণ শিক্ষিত পরিবারের ছেলে সরকারি চাকরী করে সেজন্য রাজি হইছে।কিন্তু মেয়ে নুসরাতকে তার বাবা একবার ও জিজ্ঞেস করে নাই?নুসরাত তুমি এ বিয়েতে রাজি নাকি? তোমার পছন্দ নাকি এ ছেলেটা। নুসরাত ও ভয়ে বলে নাই সে যে শাহরিয়া কে ভালোবাসে।
“
“
__নুসরাত বিয়ে ঠিক হেয়ে গেলো পাগলের মতো হয়ে গেলো শাহরিয়া। যাকে নিয়ে এতো স্বপ্ন দেখছে সেকিনা আরেকজনের হয়ে যাবে। সবসময় কান্না করে একা একা বসে থাকে।শাহরিয়ার বেষ্ট ফ্রেন্ডস তার বাবা বলে?শাহরিয়া তোমার কি চাই বাবাকে বলো তুমি কি কারণে এমন মন খারাপ করে থাকো।আমি তোমার বেষ্ট ফ্রেন্ডস আমি কথাদিলাম তোমার মন ভালো করতে সব কাজ করতে রাজি আছি আমি।শাহরিয়া এখন চিৎকার দিয়ে বাবাকে বলতে চাইলে বলতে পারতেছেনা? বাবা আমি একটা মেয়েকে খু্ব ভালোবাসি তাকে ছাড়া আমি খুব অসহায়। তাকে তুমি আমার কাছে এনে দাও আমি তার মুচকি হাসিটুকু দেখতে চাই।এটা বলতে চাইলেও বলতে পারতেছেনা কারণ নুসরাত এর ২ দিন পর বিয়ে।
___বউ সেজে বসে আছে মায়াবতী লাজুক কন্যা নুসরাত। যেখানে বর সেজে নিতে আসবে শাহরিয়া আর সে যায়গাতে অন্য আরেকজন।বিয়ে হয়ে গেলো নুসরাত এর চলে গেলো শশুর বাড়িতে। চলতেছে তাদের সুখের সংসার। নুসরাত ৫ মাস পরে বেড়াতে আসছে বাবার বাড়িতে।সে ব্রিজটা দেখে মনে পড়ে গেলো শাহরিয়ার কথা।কিন্তু ব্রিজের এর উপরে সে মানুষটিকে আর দেখা যায় না।নুসরাত অনেক কষ্ট করে শাহরিয়া ফোন নাম্বার খুঁজে পাইছে। আজ সে সব কষ্টের কথা শাহরিয়াকে খুলে বলবে। বলবে তার বলতে না পারা ভালোবাসার গল্প ফোন দিলো শাহরিয়া কাছে??
__হ্যালো অাসসালামু_আলাইকুম।
__ওয়ালাইকুমসালাম জ্বি কে বলছেন??
__তুমি কি শাহরিয়া নাকি??
__হ্যাঁ তুমি কে?
__আমি নুসরাত ছিনতে পারছো নাকি??
__না ঠিক ছিনতে পারি নাই??
__ আমি সে নুসরাত যার জন্য তুমি ব্রিজে উপরে বসে থাকতে।
__ও আচ্ছা নুসরাত কেমন আছো তুমি?
__ভালো আছি, হঠাৎ তোমার কথা মনে পড়ছে তাই নাম্বার খুঁজে ফোন দিলাম।
__ হঠাৎ আমার কথা মনে পড়লো কি কারণ কি???
__এমনে হঠাৎ মনে পড়ছে।
__কেন মনে পড়ছে?
__ তোমাকে অনেক ভালোবাসি যে তাই।
__কি?
__আমি তোমাকে ভালোবাসি যে তাই মনে পড়ছে অনেকদিন দেখি না তোমাকে।
__শাহরিয়া বড় একটা নিশ্বাস পেলে বলে?তাহলে কেনো আগে বলো নাই তুমি যে আমাকে ভালোবাসো তুমি শুধু একবার বলে দেখতে তাহলে তুমি আজ আমার পরিবারের সদস্য হয়ে থাকতে। কেনো আগে বলো নাই?
__ভয় করছে যদি তুমি যদি আমার ভালোবাসা কুবুল না করো তাই।
__ আমি যে ভয় এ মনে রেখে আজ তোমাকে হারিয়েছি। সে ভয়ে তুমি মনে রেখে তুমি আমাকে হারিয়েছো।তুমি শুধু একবার বলতা তুমি যে আমাকে ভালোবাসো। তোমার মতো লাজুক মেয়ে কে পাইলে তো জিবনে আর কি চাই??
___নুসরাত কান্না মুখে বলে Sorry আমার ভুলটা অইখানে চিলো।Sorry টা এজন্য বলছি ভালোবাসার কথা যদি আগে তোমার কাছে প্রকাশ করতাম তাহলে তোমার পাশে আজ আমি থাকতাম।
__ কি আর বলবো তোমাকে তারপরেও বলি আগে যা হইছে সব ভুলে যাহ এখন। নিজের পরিবারের দিকে খেয়াল দাও। আর আমাকে যেভাবে ভালোবাসতা ঠিক তার মতো করে তোমার স্বামীকে কে ভালোবাসো।
__নুসরাত কান্না মুখে উওর দিলো আচ্ছা ঠিক আছে ভালো থেকো।
>>শেষ হয়ে গেলো তাদের গল্প। এবার আসুন ডিজিটাল যুগের সমাজের কিছু ভুল??
(১) মা,বাবা মেয়েকে না জিজ্ঞেস করে তার পছন্দ এর কথা না জেনে শুনে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া।
(২) বিয়ের পরে স্বামী থাকার পরেও পুরানো প্রেমিকএর সাথে পরকিয়া ভালোবাসা জড়িত থাকা।
(৩) বিয়ের পরে স্বামী সন্তানকে ছেড়ে আগের পুরানো প্রেমিক এর সাথে পালিয়ে বিয়ে করা।
এ তিনটা কাজ এখন বাংলাদেশ এ ইদানীং বেশি চলতেছে। কিন্তু শাহরিয়া ইচ্ছা করলে নুসরাত এর সাথে পরকিয়া প্রেম করতে পারতো।করতে পারতো পালিয়ে গিয়ে আবার বিয়ে।কিন্তু শাহরিয়া কেনো করে নাই জানেন নাকি??
শাহরিয়া সমাজ গড়তে শিখছে নষ্ট করতে শিখে নাই।সে যদি নুসরাত এর সাথে প্রেম করতো বা পালিয়ে বিয়ে করতো দুই পরিবারে ঝগড়া শুরু হইতো। নষ্ট হইতো নুসরাত এর স্বামীর সংসার। তাই নিজের ভালোবাসাকে কবর দিছে শাহরিয়া নিজের সমাজটুকু সুন্দর রাখছে।
তাই বলি যদি কাউকে মন থেকে ভালোবাসেন তাহলে বুকে চেপে না রেখে সময়তে বলি পেলুন। আর হ্যাঁ যদি না বলতে পারেন তাহলে মনের ভালোবাসা মনে কবর দিয়ে রাখবেন অসময় প্রকাশ করি সমাজ টা নষ্ট করবেন না প্লিজ।